কলেজ জীবনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তুতি

আমরা যদি আমাদের শিক্ষা জীবনকে তিন ভাগে ভাগ করি তবে স্কুল ও কলেজের পর বিশ্ববিদ্যালয় হলো এই শিক্ষাজীবনের অন্তিম ও গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কথায় আছে, শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। সুতরাং শিক্ষাজীবনের শেষ ভালো করতে হলে অবশ্যই তোমাকে ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। আর বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য কী পরিমান লড়াই করতে হয় তা তো তোমরা খুব ভালো করেই জানো। কারণ, এখন এডমিশন ব্যাপারটার নামই হয়ে গেছে ‘ভর্তিযুদ্ধ’। তাই এ যুদ্ধের জন্যেও দরকার কিছু অস্ত্র ও কৌশল। যা তোমাকে যুদ্ধে প্রতিকূলতার মাঝে সামনে এগিয়ে গিয়ে জয় এনে দিতে সাহায্য করবে। আর এজন্য দরকার পূর্ব প্রস্তুতি।
তোমরা যারা এবার উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ছো তারা কিন্তু এখন থেকেই নিতে পারো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি। এতে করে তোমার নিজের পড়ার প্রতি মনোযোগ যেমন বাড়বে, তেমনি কমবে এডমিশনের সময় বিশাল পরিমান সিলেবাসের বোঝা। সুতরাং যারা এইচএসসি পরবর্তী সময়ে সারাদিন পড়ে পড়ে পাগল হয়ে যাবার ভয়ে এখন থেকেই তটস্থ তারা কিন্তু খুব সহজেই কিছু টিপস মাথায় রেখে সামনে এগোতে পারো।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সময় কিন্তু অন্য সবার মত তোমার আর এত টেনশন থাকবেনা। তখন শুধু নিজের প্রস্তুতিকে ঝালাই করে নিলেই তুমি ভর্তিযুদ্ধের জন্য হয়ে যাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ এক যোদ্ধা। তো কথা না বাড়িয়ে চলো শুরু করা যাক আমাদের আজকের টিপস।

লক্ষ্যকে করো স্থির

সবার প্রথম কাজই এটি। তুমি সায়েন্স, কমার্স বা আর্টস যে বিভাগের শিক্ষার্থীই হওনা কেন, তোমার প্রথম কাজ হলো নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে লক্ষ্য স্থির করা। এডমিশনের সময় অনেক শিক্ষার্থীকেই দেখা যায়, তাদের আসলে কী পড়া উচিত তা নিয়ে তারা কনফিউজড থাকে। আর এজন্য স্পেসিফিক ভাবে প্রস্তুতি নেয়াটাও মুশকিল হয়ে পড়ে। এতে করে ভর্তি প্রস্তুতি ক্ষুণ্ন হয় এবং প্রচুর সময় নষ্ট হয়। এ সমস্যা এড়াতে তোমার উচিত আগে থেকেই ক্যারিয়ারের লক্ষ্য স্থির করে ফেলা।
তুমি যদি প্রশ্ন করো কিভাবে নিজের ক্যারিয়ার বা জীবনের লক্ষ্য স্থির করবে তার উত্তর কিন্তু বেশ সোজা। তুমি নিজেকে জিজ্ঞেস করো তুমি কী নিয়ে পড়লে অথবা তোমার জীবনে কোন দিক ব্যবহার করে এগোলে তুমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। সেটির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন বিষয়কেই বেছে নাও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার লক্ষ্য হিসেবে। মনে রাখবে, সবার সাথে তাল মিলিয়ে বা শুধু পাশের বাসার আন্টির সাথে জেদ করে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হবার কথা ভেবে ফেলো না কিন্তু! কারণ এটা যদি তোমার মনের মত বিষয় না হয় তবে কিন্তু সেটা তোমাকেই ভোগাবে।

প্ল্যান করে ফেলো

নিজের লক্ষ্যকে যদি একটা গন্তব্য ধরো তবে সেই গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য কিন্তু বিশাল মাপের একটা প্ল্যান করা প্রয়োজন। প্ল্যানটা বিশাল মাপের না হলেও সেটা কিন্তু কার্যকরী হতে হবে। গন্তব্যে পৌঁছে যাবার জার্নিটা কেমন হবে তা কিন্তু তুমি জানোনা। আর তাই আগে থেকেই সম্ভাব্য সমস্যা বা বাধার কথা ভেবে তুমি যদি একটা প্ল্যান করে ফেলো তবে কিন্তু তোমারই লাভ। তাই ঘরের টেবিলে বসে পড়া থেকে শুরু করে একদম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধ পর্যন্ত তোমার কর্মকান্ড কেমন হবে বা কেমন হওয়া উচিত তার উপর করে ফেলো অসাধারণ একটি প্ল্যানের খসড়া।

এইচএসসি সবার আগে

অনেকে আবার এডমিশনের প্রতি এত আগ্রহী হয়ে পড়ে যে, সামনের পরীক্ষা এইচএসসি সেটার কথা ভুলে যায়। যদিও এডমিশন খুব বেশী জরুরী কিন্তু তোমার ভুলে গেলে চলবেনা যে, তুমি যদি দুর্ভাগ্যবশত উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হয়ে যাও তবে কিন্তু এডমিশনের এতসব প্রস্তুতি কোন কাজেই আসবেনা। অর্থাৎ এক কথায় উচ্চ মাধ্যমিকের ছাড়পত্র পরীক্ষা এইচএসসি হলো বিশ্ব বিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রায় একমাত্র টিকেট। তাছাড়া তোমার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার মধ্যে মান বন্টনে কিন্তু তোমার উচ্চ মাধ্যমিকের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল একটি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই ভর্তি পরীক্ষার মূল নম্বরের সাথে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল থেকে প্রায় ৬০ নম্বর জায়গা পূরণ করা সম্ভব। তুমি উচ্চ মাধ্যমিক থেকেই যদি এডমিশনের প্রস্তুতি তবে অবশ্যই এটা একটি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু এজন্য নিজের বর্তমান অবস্থা ভুলে গেলে কিন্তু চলবেনা।

লক্ষ্যকে বাড়তি সময় দাও

তুমি যদি উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী হয়ে থাকো তবে তোমার প্রতিনিয়তই প্রত্যেকটি বিষয়কে প্রায় সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হয়। কারণ, এইচএসসির ফলাফলে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেতে সকল বিষয়ে ভালো করার বিকল্প নেই। আর এজন্য কোন বিষয়কেই আসলে ছোট করে দেখা উচিত নয়। তাছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এইচএসসির রেজাল্টের পরে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যায়, যে বিষয়টাকে তুমি সহজ বা অন্যগুলোর তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ ভেবেছিলে সেই বিষয়টিতেই তোমার ফলাফল খারাপ হয়েছে। অথবা উচ্চতর গণিত, রসায়ন  কিংবা ইংরেজির মত কঠিন সব বিষয়গুলোতে তুমি ঠিকই ভালো করেছো কিন্তু বাংলা কিংবা সমাজবিজ্ঞান বিষয়কে তুমি সহজ ভেবে তেমন গুরুত্ব দাওনি। তাই নাম্বার ভালো পাওনি। এ তো গেলো সোজা হিসেব। কিন্তু যেহেতু তুমি উচ্চ মাধ্যমিকে থাকা অবস্থাতেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে চাও তাদের জন্য সকল বিষয়ে গুরুত্ব দেবার পাশাপাশি তোমার লক্ষ্য যেখানে স্থির সেখানে তোমার দিতে হবে অতিরিক্ত সময়। কেননা তোমার পরবর্তী জীবন এই লক্ষ্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে। ধরা যাক তুমি ভবিষ্যতে একজন চিকিৎক হতে চাও। আর তাই তোমার লক্ষ্য এখন উচ্চ মাধ্যমিকের পর যে কোন মূল্যে মেডিকেলে ভর্তি হওয়া।
যেহেতু মেডিকেলে ভর্তি হওয়াটা তোমার লক্ষ্য সুতরাং সেখানে ভর্তি হতে হলে পরীক্ষায় যেসব বিষয়ের উপর প্রশ্ন থাকে সেসব বিষয়কে তোমার এখন থেকেই বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। তুমি তোমার চেনা কোন মেডিকেলে পড়ুয়া ভাইয়া/আপু কিংবা খুব সহজেই গুগল মামার সাহায্যে তোমার কাঙ্ক্ষিত তথ্য নিয়ে কিন্তু সে বিষয়ের উপর অতিরিক্ত গুরুত্বারোপ করতে পারো।

ফাঁদগুলোকে এড়িয়ে চলো

‘পাশ না করলে মূল্য ফেরত’ অথবা ‘চান্স পাওয়ার পর টাকা’ এই কথাগুলো ঢাকায় থেকেছে আর কখনোই দেখেনি এমন শিক্ষার্থী পাওয়া দুস্কর। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার মৌসুম শুরু হবার আগেই ফার্মগেট কিংবা মতিঝিল সহ রাজধানীর বিশেষ বিশেষ এলাকায় এসব পোস্টার ছেয়ে যায় বলা চলে। বিভিন্ন লোভনীয় সব কথাবার্তা আর একদম চান্স পাওয়ার ১০০% নিশ্চয়তা দিয়ে ছাপানো পোস্টার বা কোচিং এর বিজ্ঞাপন গুলো যে একটাও তোমার কাজে আসবেনা তা মনের মধ্যে ভালো করে গেঁথে রাখা দরকার। কেননা পড়াটা তোমার নিজের মাঝে। বাকিটা শিক্ষক ধরিয়ে দেন। সেখানে চান্স না পেলে মূল্য ফেরত কিংবা শতাধিক পাশের নিশ্চয়তা বলে আসলে কিছু নেই।
শুধু কী কোচিং! বিভিন্ন গাইড, ভর্তি পরীক্ষা সহায়ক বই, অমুক সিরিজ, তমুক ক্যাপসুল নামে হাজারো বই তোমাকেপ্রলোভন দেখিয়ে কেনার জন্য বাধ্য করবে। কলেজে পড়া অবস্থায় দ্বিতীয় বর্ষেই দেখবে বিভিন্ন কোচিং থেকে টানাটানি কিংবা বড় ভাইদের দিয়ে বিভিন্ন রকমের কথা দিয়ে তোমাদের ভোলানোর চেষ্টা করা হবে। একদম ঝেড়ে ফেলো এসব চিন্তা। বেশি সমস্যা হলে ঘরে বসে যে কোন সময় ঢুকে পড়ো টেন মিনিট স্কুলের ওয়েবসাইটে। সেখানে বসেই তুমি সহজে ঢুকে যেতে পারো ‘Admission’ লেখা বাটনে। কী নেই সেখানে? বিষয় ভিত্তিক ভিডিও টিউটোরিয়াল, পূর্বের লাইভ ক্লাস, স্মার্টবুক, কুইজ, পূর্ববর্তী বছরগুলোর ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন উত্তর সহ…… আরো কত কী! তবে আজকেই ভালোটার শুরু হোক টেন মিনিট স্কুলের হাত ধরেই।

এবার হও সিরিয়াস

অনেক তো ঘোরাঘোরি হলো। অনেক আড্ডাবাজি হয়েছে এবার না হয় সময় এসেছে সিরিয়াস হবার। কেননা তুমি কলেজ জীবনের অন্তিম মুহূর্তে।  তোমার উচিত এখন থেকেই পড়াশনোয় সিরিয়াস হওয়া। আমরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই খেয়াল করলেই দেখবো আমরা শুধুমাত্র ফেসবুক কিংবা ইউটিউবে ঢুঁ মেরে ঘন্টার পর ঘন্টা মূল্যবান সময় নষ্ট করছি। অথবা যখন পড়ার দরকার ছিলো তখন বন্ধু কিংবা অন্য কারো সাথে অপ্রয়োজনীয় আড্ডা বা চ্যাটিং এর মাধ্যমে সময় কাটাচ্ছি। এটাকে আসলে সময় কাটানো বলা যাবেনা, এটাকে বলা উচিত সময় নষ্ট। হ্যাঁ, কারণ তুমি নিজেই চিন্তা করে দেখো এই সময়গুলোতে যদি ফেসবুকে বা ইউটিউবে ঢুঁ না মারতে কিংবা বন্ধুদের সাথে অপ্রয়োজনীইয় আড্ডা মেরেসময় নষ্ট না করতে তবে কিন্তু এটুকু সময় বেশ ভালোভাবে পড়াশোনায় কাজে লাগানো যেত। এভাবে প্রতিদিন যদি দুই ঘন্টা করে আড্ডা আর ফেসবুক বাদ দিয়ে পড়ার কাজে লাগাও তবে মাস শেষে সেটি দাঁড়াচ্ছে ৬০ ঘন্টা। অর্থাৎ সেটি প্রায় আস্ত দুই দিনের বেশি সময়! একবার ভাবো আমরা তো কত টাকা সঞ্চয় করে কত কিছু কিনি।
কখনো কি ভেবেছো সময় ও সঞ্চয় করা সম্ভব! সময় সবচেয়ে বেশি মুল্যবান এ পৃথিবীতে। আজ থেকে সময় সঞ্চয় করে পড়াশোনায় হয়ে যাও সিরিয়াস। এখন হয়তো তুমি বলতে পারো টেবিলে বসলে পড়ায় সিরিয়াস হতে হলে কী কী করণীয়! আরে এটা তো খুব সোজা। পড়াশনোয় সিরিয়াস হবার জন্য কিন্তু তুমি বেশ কিছু সহজ জিনিস মাথায় রাখতে পারো। যেমন ধরো, পড়ার নির্দিষ্ট টাইম মেনে চলতে পারো। অন্য সময় যাই করো না কেন পড়ার সময় পড়াটা রাখতে হবেই হবে। এছাড়াও ধরো পড়াতে সিরিয়াস ভাবে মন দিতে পড়ার সময় হাতার নাগাল থেকে নিজের স্মার্ট ফোন দূরে রাখো। যেন ইচ্ছে হলেই সেটি ধরতে না পারো। এতে পড়ায় তোমার মনোনিবেশ করতে সুবিধে হবে। 

মন কে ঘোরাও নিজের লক্ষ্যে

মন কে নিজেই বোঝাও। এখন তোমার লক্ষ্যে পৌঁছানর সময়। সবার মত আড্ডাবাজি আর খেলাধুলো করে সময় কাটালে চলবে না। কারণ এই পথটা অনেক বড়। নিজেই নিজেকে জিজ্ঞেস করো, এই পথে এখন থেকেই দৌড় শুরু না করলে তুমি সময় মত গন্তব্যে পৌঁছুতে পারবে তো! ঢাবিতে পড়ুয়া আমার এক ভাইয়া আমাকে বলেছিলে, মোটিভেশন বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই। কারণ মানুষের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা সে নিজেই। সুতরাং, তুমিও হয়ে যাও নিজেই নিজের অনুপ্রেরণা দাতা। এতে করে তোমার নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।

হাল ছেড়োনা! হাল ছেড়োনা!

উপরে যেসব বিষয়ের কথা বলা হয়েছে তা কলেজ জীবনে মেনে চলা একটু কঠিনই বটে তা বলতে দ্বিধা নেই। কিন্তু ব্যাপার হলো হতাশ হওয়া যাবেনা। দুদিন ঠিকভাবে এরকম ভাবে নিয়ম মাফিক চললেও তিন দিনের দিন দেখবে আর ভালো লাগছেনা। একদিন নিয়ম থেকে সরে যেতে ইচ্ছে করছে। তোমার কাছে মনে হবে মাত্র এক দিনই তো! অথবা মাত্র একবারই তো! কিন্তু এই ‘একবারই’ তোমার ধারাবাহিকতার কাল হয়ে দাঁড়াবে। তখন আবারো ইচ্ছে করবে একটু ঘুমুতে অথবা একটু ফেসবুকিং করতে।
এজন্যই দু বার বলছি, হাল ছেড়োনা, হাল ছেড়োনা। যত কিছুই হোক তুমি তো ভবিষ্যতের ভর্তি যুদ্ধের একজন যোদ্ধা, তাইনা? তাই যোদ্ধার মত যে কোন প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই থাকতে হবে অনড়। এবার তোমার উপর যেই বাধাই আসুক না কেন, যত বড় হতাশাই তোমাকে ঘিরে ধরুক না কেন তুমি তোমার লক্ষ্যে খুঁটি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে সটান হয়ে।

বানাও তোমার মেন্টর

তোমরা কি আয়মান সাদিক ভাইয়ার ঐ ভিডিওটা দেখেছো? যেখানে আয়মান ভাইয়া ও সাদমান ভাইয়া বলেছিলেন তারা আসলে দুজন দুজনের মেন্টর। তোমার জীবনের যে কোন ক্ষেত্রে মেন্টর নির্বাচন করা খুবই জরুরী। কারণ হলো একজন রোল মডেল যদি তোমার সামনে না থাকে তবে তোমার কাছে নতুন যে কোন কিছু তৈরী করা একদম অসম্ভবই বটে! এ যেমন ধরো আমি তোমাদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতির বিষয়ে টিপস লিখছি এটার জন্য কিন্তু আমার অনেক গুলো আর্টিকেল ও ব্লগ পড়তে হয়েছে। আমি টিপস জাতীয় যে কোন লেখা লিখতে হলে সবার আগে উঁকি দেই টেন মিনিট স্কুলের ব্লগের ওয়েবসাইটে।
টেন মিনিট স্কুলের ব্লগ সাইটটি মানুষ হলে নিঃসন্দেহে আমি তাকে টিপস মেন্টর হিসেবে মেনে নিতাম। তো যাই হোক তুমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যে লক্ষ্যে এগুচ্ছো সেক্ষত্রে যারা সফল এমন কাউকে নিজের মেন্টর বানিয়ে তার পরামর্শে তোমার পড়ালেখা বা অন্য কাজে আগানোটা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আর এজন্য তোমার একটু খুঁজে দেখতে হবে সফল ব্যক্তিদের। আর একজন পছন্দমত মানুষকে মেন্টর বানিয়ে তুমি উঠে আসতে পারো তোমার এই যুদ্ধের এক ধাপ উপরে।

মুখস্তকে জানাও বিদায়

অনেক হলো মুখস্থ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শোনার সাথে সাথে তোমার প্রথম কাজ হলো মুখস্থ শব্দটাকেই তোমার মনের ডিকশনারি থেকে মুছে ফেলা। কেননা মাধ্যমিক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিকে কোন ভাবে একটা না একটা বিষয় মুখস্থ করে তুমি হয়তো পরীক্ষায় লিখে দিয়ে নাম্বার পেয়ে গেছো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি থেকে শুরু করে একদম শেষদিন পর্যন্ত বুঝে বুঝে পড়া ছাড়া বিকল্প নেই। তাই কলেজে কোন টপিক বা প্রশ্ন মুখস্থ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য সেটি এক্ষুনি বুঝে নেয়াটা একান্ত কর্তব্যের মাঝে পড়ে যাও। মুখস্থ কে যত তাড়াতাড়ি টাটা বায় বায় বলছো ততই তোমার মঙ্গল। আর সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে মুলত শিক্ষা থেকে মুখস্থ শব্দটা কে চিরতরে মুছে ফেলার জন্য। সুতরাং মুখস্থে কে করো বিদায়, বুঝে পড়া কে বলো Hi!
সহজ ভাবে এসব টিপস মেনে চললে তুমি কলজে থাকতেই ঝালিয়ে নিতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি। আর যে কোন সমস্যায় টেন মিনিট স্কুল তো আছেই। তো ভালো কিছুর শুরু হোক এখনই!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ